করোনাকালে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন অনেকেই। অর্থ, খাবার, বস্ত্র বিতরণ থেকে শুরু করে চিকিৎসাসেবা নিয়েও এগিয়ে এসেছেন কেউ কেউ। আবার কেউ করোনায় আক্রান্তের জীবন বাঁচাতে দান করেছেন প্লাজমা। তবে এই সময় এক বিরল সত্য সামনে আনলেন বলিউডের নারী প্রযোজক নিধি পারমার হিরনন্দানি। অসহায় মায়ের নবজাতক কিংবা দুধের শিশুদের জীবন বাঁচাতে করোনাকালে দান করেছেন নিজের বুকে ৪২ লিটার দুধ।
‘সান্ড কি আঁখ’খ্যাত বলিউড প্রযোজক নিধি পারমার হিরনন্দানি ওই ছবির পরিচালক তুষার হিরনন্দানির স্ত্রী। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে নিধি জানান, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসেই শিশুপুত্রের জন্ম দেন তিনি। সন্তানের জন্মের পর থেকে তার বুকে প্রচুর দুধ নিঃসৃত হতো। ছেলের খিদে মেটার পরও বুকের অনেকটা দুধ বাড়তি থেকে যেত। তাই প্রথম প্রথম তিনি তা ফ্রিজে সংরক্ষিত করে রাখতেন। কিন্তু সেই সংরক্ষণের পরিমাণ ক্রমেই বাড়তে থাকে। আর নিধি তা নষ্ট করতে চাইছিলেন না। অনেকের কাছেই এ বিষয়ে পরামর্শ চেয়েছিলেন। কিন্তু কেউ ফেসপ্যাক তৈরির পরামর্শ দিয়েছিলেন, কেউ আবার ঠাট্টার ছলে ঘর মোছার কথা বলেছিলেন! মানুষের এমন বাজে কথায় মাথা না দিয়ে বুকের দুধ সম্পর্কে ইন্টারনেটে পড়াশোনা করেন এই বলিউড প্রযোজক। এর পরই দুধ দানের কথা জানতে পারেন। নিজের গাইনোকোলজিস্টের কাছে পরমর্শ নিয়ে নিধি মুম্বাইয়ের খার এলাকার সূর্য হাসপাতালের মিল্ক ব্যাংকে সেই দুধ দান করেন।
করোনাকালে অসহায় মানুষগুলোকে দিন পার করতে হয়েছে খাবারের কষ্ট নিয়ে। আর সেসব মায়ের দিনগুলো কেমন গেছে, যারা খাবারের অভাবে নিজের সন্তানের দুধ পান করানো নিয়ে কষ্ট করেছেন? অনেকেই হয়তো এমন করে ভাবার সময় পাননি। কিন্তু নিধি ভেবেছেন। স্নেহের মূল্য বুঝেই করোনাকালে সদ্যোজাতদের ত্রাতার ভূমিকায় অবতীর্ণ হন। নিজের বাড়তি দুধ ফেলে না রেখে অসহায় মায়ের শিশুদের দান করে দেন।
এর মধ্যেই লকডাউন শুরু হয়ে যায়। নিধি চিন্তিত ছিলেন, নিজের ছোট্ট শিশুকে রেখে তিনি বাইরে গিয়ে বুকের দুধ দান করবেন কেমন করে? সেই সমস্যারও সমাধান হয়ে যায় খুব সহজেই। হাসপাতালের পক্ষ থেকে বাড়িতে এসে সংরক্ষিত দুধ নিয়ে যাওয়া হয়। সূত্র : ডিএনএ।
Leave a Reply